আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজা উপত্যকায় অনাহারে ভুগে চার বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম মোহাম্মদ ইয়াসিন। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে। এর মাধ্যমে গাজায় ইসরায়েলের অবরোধ শুরুর পর থেকে অনাহারে মৃত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে ৫৮-তে দাঁড়াল। গাজার চিকিৎসক ইজ্জেদিন শাহিন বলেন, এখন উপত্যকাটির সুস্থ শিশুদের ওপরও খাদ্যাভাবের প্রভাব পড়ছে।
রোববার (২৫ মে) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজা শহরে ক্ষুধার কারণে চার বছরের এক শিশু মারা গেছে বলে জানিয়েছে সেখানকার সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ। মৃত ওই শিশুর নাম মোহাম্মদ ইয়াসিন।
আল জাজিরাকে দেওয়া এক বিবৃতিতে সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, ইসরায়েলের আরোপিত অবরোধের ফলে খাদ্য, পানি ও মানবিক সহায়তা গাজার বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছাতে না পারায় এই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
মাহমুদ বাসাল আরও বলেন, “এটা গাজায় ক্ষুধায় প্রথম শিশু মৃত্যুর ঘটনা নয়। খাদ্য ও পানি প্রবেশ করতে না পারলে, সামনে আরও অনেক শিশুর মৃত্যু আমরা দেখতে পাবো।”
আর তাই এই দুঃসহ পরিস্থিতির অবসানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
এদিকে গাজার চিকিৎসক ইজজেদিন শাহিন জানিয়েছেন, দুর্ভিক্ষ এখন এমন শিশুদেরও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে যারা আগে মোটামুটি সুস্থ ছিল।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “দুর্ভিক্ষ এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে শুধুমাত্র অসুস্থ বা বিশেষ যত্নের দরকার এমন শিশু নয়, বরং আগে সুস্থ ছিল এমন শিশুরাও মৃত্যুর শিকার হচ্ছে, শুধুমাত্র অপুষ্টির কারণে।”
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষুধা বা অনাহারের কারণে মোহাম্মদ ইয়াসিনের মৃত্যু এই ধরনের ৫৮তম ঘটনা—অর্থাৎ ইসরায়েলের অবরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ক্ষুধার কারণে এখন পর্যন্ত ৫৮ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে।
জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা আগেই সতর্ক করেছিল, গাজা চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে। একাধিক প্রতিবেদন ও তথ্য অনুযায়ী, বিশেষ করে উত্তর গাজায় খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহ প্রায় সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। সহায়তা পৌঁছাতে না পারায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে।
এর মধ্যেই খাদ্যের অভাবে ফের শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটলো।